এবার নাম মুছে গেল ডা. মুরাদের
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ডা. মুরাদ হাসান তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে নিজেকে সরাতে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর সেটি গ্রহণ হওয়ার পরদিনই আজ বুধবার (৮ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর বসার কক্ষের দরজায় লাগানো নামফলক থেকে তার নাম সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
মুরাদ হাসানের ছেড়ে যাওয়া দপ্তরের একজন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, আজই তার লেখা নাম সরানো হয়েছে। অর্থাৎ মুরাদ হাসান আর প্রতিমন্ত্রী নেই।বাংলাদেশ সচিবালয়ে অবস্থিত তথ্য মন্ত্রণালয়ের যে দপ্তরে প্রতিমন্ত্রী বসতেন, সেখানে ব্যাপক সংস্কার করে সৌন্দর্যবর্ধন করা হচ্ছে। মূলত, মুরাদ হাসানের ইচ্ছাতেই তার কার্যালয়টি সাজানো হচ্ছিল।
এ জন্য সাময়িকভাবে প্রতিমন্ত্রী আরেকটি কক্ষে বসতেন। সেখানে নামফলক ছিল। সেখান থেকেই তার নাম সরানো হয়েছে। এ কারণে সাজানো দপ্তরে বসার ইচ্ছাও পূরণ হলো না তার। অশালীন, শিষ্টাচারবহির্ভূত ও নারীদের প্রতি চরম অবমাননাকর বক্তব্য দিয়ে মন্ত্রিত্ব হারান তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশের পর গতকাল মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) তিনি পদত্যাগ করেন। গতকাল রাতেই তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রপতি। রাতেই এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
একই সঙ্গে মুরাদ হাসান দলীয় পদও হারাতে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে তাকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে সুপারিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগ। মুরাদ হাসান জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়া সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীর মতো সংসদ সদস্য পদও হারাতে পারেন মুরাদ হাসান। সে আলোচনাও শুরু হয়েছে।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনিকে নিয়ে মুরাদ হাসানের করা অশ্লীল মন্তব্য ঘিরে গত কয়েক দিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সমালোচনা হচ্ছিল। এরপর ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বকালে নায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে ‘অশ্লীল’ ফোনালাপের একটি অডিও ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে ওই নায়িকাকে তিনি অশ্লীল ইঙ্গিত দিয়ে রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে তার সঙ্গে সময় কাটাতে আহ্বান জনান। আর না গেলে ওই নায়িকাকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও গোয়েন্দাদের দিয়ে হেনস্তা করার হুমকিও দেন। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি করা ছাত্রীদের বিষয়েও তিনি আপত্তিকর বক্তব্য দেন। এসব নিয়ে বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টির পর মুরাদ হাসানকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর তিনি পদত্যাগ করেন। এখন আর তার হদিস পাচ্ছে না কেউই।