মেয়েটির সাথে নানান ঢংয়ে মেতে উঠেছে টিয়া পাখিটি বলছে কথা, এ যেন মীনা কার্টুনের মীনা ও মিঠু তুমুল ভাইরাল তাদের ভিডিও
একসময় আমাদের দেশের বাচ্চা থেকে শুরু করে বুড়ো পর্যন্ত সকলেই মীনা কার্টুনটির একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলো। এখনও আছে তবে সেটা হয়তো আগের অবস্থানে নেই। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, গ্রামের সাদাসিধা মেয়ে মীনা এবং তার বাংলা-বুলি, বর্তমান ডিজুস যুগের বাচ্চাদের কাছে অনেকটাই অবহেলিত।
‘ডোরেমন’ জাপানি কার্টুন হলেও ভারতীয়রা একে হিন্দিতে ডাবিং করে ‘নিক’ চ্যানেলের মাধ্যমে আমাদের দেশের বাচ্চাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। তারা এখন ডোরেমনের প্রেমে এতোটাই মশগুল যে, বাংলা ভুলে যেয়ে এখন তারা অনর্গল হিন্দিতে কথা বলে যেটা আমাদের জন্য খুবই দুঃখজনক ব্যাপার।
যে ভাষার জন্য এতো যুদ্ধ, এতো আত্মত্যাগ,- সেই ভাষাই যদি আগামী প্রজন্মের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা হারায়, তাহলে এর চেয়ে বড় লজ্জা, কি হতে পারে? এসব ব্যাপার চিন্তা করতে হবে।বাচ্চাদের কিন্তু এখানে কোন দোষ নেই কারন, বাচ্চারা সবসময়ই অনুকরনপ্রিয় এবং নতুনের দলে। তারা সেটাই গ্রহন করবে যেটা তাদের ভালো লাগবে। একটা সময়ে, এমন কোন বাচ্চা খুজে পাওয়া যেতো না যে কিনা মীনা কার্টুন পছন্দ করেনা বা দেখেনি।
আর এখন- আমি নিজে এমন অনেক বাচ্চাদের দেখেছি যারা মীনার নামটা পর্যন্ত শোনেনি।এর জন্য দায়ী আমরাই কারন, আমরা তাদের সামনে মীনাকে উপস্থাপন করার প্রয়োজনীয়তা বোধ করিনি। অনেক বাবা-মায়েরা ভাবে- তাদের বাচ্চা ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ে, মীনা দেখে কি করবে? তারচেয়ে ইংলিশ মুভি দেখলে ইংলিশের চর্চাটা ভালো হবে। হিন্দি ডোরেমন দেখলেও সমস্যা নেই। ডোরেমনের কারনে তারা যে হিন্দি শিখছে সেটাতে তাদের কোন মাথা ব্যাথা নেই।
কারন, আমাদের সুশীল সমাজ কিন্তু বর্তমানে হিন্দি ভাষাটাকে একটা স্মার্ট ভাষা হিসেবেই গ্রহন করে নিয়েছে। হিন্দি বলাটা বর্তমানে একটা Passion- তাদের কাছে এখন হিন্দি ভাষাটা এবং সংস্কৃতিটা অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউনিসেফ যেখানে মিনাকে একটি আইকন হিসেবে সবার মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানে আমরা নিজেরাই এর সঠিক মূল্যায়ন করতে পারছি না। নিজস্ব সংস্কৃতির আদলে নির্মিত মীনাকে বাচ্চাদের কাছে সঠিকভাবে তুলে না ধরে পাশ্চাত্য সংস্কৃতি নিয়ে লাফালাফি করছি আমরা। ফলাফল, সবার চোখের সামনেই।
ভিডিওটি দেখতে ক্লিক করুন…