বিসিএসে অভূতপূর্ব সাফল্য দেখিয়ে বাবার স্বপ্ন পূরণ করলেন তুষার
৩৯তম বিসিএসে ডা. আমিরুল ইস’লাম তুষার অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছেন। গত ৩০ এপ্রিল প্রকাশিত ৩৯তম বিশেষ বিসিএসের ফল অনুযায়ী তিনি বিসিএস (স্বাস্থ্য ক্যাডারে) সহকারী সার্জন পদে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন।
এতে তার বাবার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হলো। তুষারের বাবা মো. শামসুদ্দিন ভূঁঞা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ফার্মাসিস্ট পদে চাকুরি করতেন। দীর্ঘ ২২বছর চাকুরি করার পর তিনি কি’শোরগঞ্জের যশোদল ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ২০০৯ সালে অবসরপ্রাপ্ত হন।
বাবার স্বপ্ন ছিল ছে’লেকে তার স্যার বানাবে। আর সেই পথ ধরেই অবশেষে ডা. আমিরুল ইস’লাম তুষার বাবার সেই স্বপ্ন পূরণ করলেন। ছে’লের এই সাফল্যে দেখে বাবার চোখে আনন্দের জল ধরে রাখতে পারলেন না। একজনে পিতার জন্য এর চেয়ে বড় খুশির সংবাদ আর কি বা হতে পারে। ডা. আমিরুল ইস’লাম তুষার কি’শোরগঞ্জের তাড়াইল উপজে’লার দামিহা ইউনিয়নের রাহেলা গ্রামের মো: শামসুদ্দিন ভূঁঞার ছে’লে। মাতা মোছা: সালমা আক্তার। তিনি
ময়মনসিংহের ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২০০৭ সালে এইচএসসি ও আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০৫ সালে এসএসসি পাশ করেন। পরে ২০০৭-০৮ সেশনে ময়মনসিংহ কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। তিনি কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজের CBMC-১৪ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে ইন্টার্নি শেষ করেন। ডা. তুষারের বেড়ে উঠা কি’শোরগঞ্জ সদরে চরশোলাকিয়ার সবুজবাগ এলাকায়। ১৯৮৮ সাল থেকেই তারা এখানে বসবাস করে আসছেন।
পরিবারের ৭ ভাইবোনের মধ্যে সবাই সুশিক্ষায় শিক্ষিত। চার বোন ও তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি ৬ষ্ঠ। তার বড়বোন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কর্ম’রত। তার পরের মেজু বোন বিএ বিএড সম্পন্ন করেছেন। সেজু বোন সরকারি প্রাই’মা’রি স্কুলের শিক্ষক। আরেক বোন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছেন। বড়ভাই ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার। সবচেয়ে ছোটভাই পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযু’ক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়াশোনা করছেন।
ডা. তুষার পড়াশোনার পাশাপাশি ক্রিকেট খেলতে খুব ভালোবাসতেন। ডা. তুষার জানান, বাবার স্বপ্নপূরণই ছিল তার জীবনের মূল লক্ষ্য। তার এ সাফল্যের পেছনে সৃষ্টিক’র্তার পর তার বাবা-মায়ের অক্লান্ত পরিশ্রম, ত্যাগ ও সদিচ্ছা সবচেয়ে বেশি ছিল। পাশাপাশি শিক্ষকদের সঠিক গাইড লাইন, তার ওপর ভরসা রাখা এবং নিয়মানুবর্তিতা ছিল প্রধান অনুপ্রেরণা। তার এ সাফল্যের পেছনে তার বড়বোন ও বড়ভাই সবচেয়ে বেশি সাহস ও শক্তি
জুগিয়েছেন। ডা. তুষার বলেন, ‘ভবিষ্যতে একজন ভাল চিকিৎসক হিসেবে কাজ করতে চাই। আমি আমা’র শহর ও গ্রামের মানুষের কাছে চিরকৃতজ্ঞ। তাই ছে’লেবেলার স্মৃ’তিবিজ’ড়িত স্থানের মানুষের পাশেই সবসময় থাকতে চাই।’