‘ব্যাবাক্কে তো লা’শ পায়, মুই তো কিছুই পাই নাই’
মোর বুকের মানিক আরিফ বাজান গেল কই। বাজান কি বাইচ্চা আছে। নাতনি কুলসুম গেল কই। ও আল্লাহ মোরে লইয়া গেলা না ক্যা। মোর বাইচ্চা থাইক্কা কি অইবো। ‘ এমন আহাজারিতে শোকের মাতম বইছে লঞ্চ দুর্ঘ’টনায় নি’হত আরিফুর রহমানের (৩৫) বাড়িতে। পুরো এলাকা জুড়েই বিরাজ করছে শোকের ছায়া।
আরিফ বরগুনার বেতাগীর মোকামিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের লতিফ মৃধার ছে’লে। চার ভাই-বোনের মধ্যে আরিফই সবার বড়। আরিফ তার চার বছর বয়সী মে’য়ে কুলসুমকে নিয়ে সোমবার ঢাকায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে যান। বোনের বাসা থেকে গত বৃহস্পতিবার বেতাগীর উদ্দেশ্যে রওনা হন। তবে ভাগ্যের নি’র্মম পরিহাসে আর বাড়ি ফেরা হলোনা আরিফুর রহমান ও তার চার বছর বয়সী মেয়ে কুলসুমের।
আরিফ গ্রামের বাড়িতে কৃষি কাজ করেন। তার স্ত্রী’ খাদিজা বেগম। আরিফ ও খাদিজা দম্পতির ৮ ও ৪ বছর বয়সী দুই মে’য়ে ও এগারো মাস বয়সী এক ছে’লে রয়েছে। নি’হত কুলসুম ছিলো তাদের দ্বিতীয় সন্তান।
আরিফের মা আলেয়া বেগম বিলাপ করতে করতে বলেন, ‘আমি আমা’র ছে’লে ও নাতনিকে ফেরত চাই, ব্যাবাক্কে তো লা’শ পায়, মুই তো কিছুই পাই নাই। মোর বুকের ধন আরিফ বাজান ও নাতনি কুলসুম কি বাইচ্চা আছে, না অর্ধ পোড়া অবস্থায় নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আর উঠতে পারেনি। না সবকিছু পুইড়া ছাই অইলো।’
আরিফের স্ত্রী’ খাদিজা বেগম বলেন, ‘আমি জিগাইলাম না বইলা লঞ্চে উঠছো ক্যা? আমা’রে ফোনে কইলো বাড়িতে একটু কাজ আছে, কী’ কাজ তা কইলো না, কইলো তুমি বুঝবা না; পরে আর তার ফোনে কল গেল না।’
আরিফ তার মে’য়ে কুলসুমকে নিয়ে অ’ভিযান-১০ লঞ্চে বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পরে লঞ্চের অ’গ্নিকা’ন্ডের দুর্ঘ’টনার কবলে পড়ে ম’র্মা’ন্তিক মৃ’ত্যু হয় তাদের। তবে এখন পর্যন্ত আরিফুর রহমান ও তার মেয়ে কুলসুমের কোন সন্ধান পায়নি পরিবার।